আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বেশি প্রিয় আমলটি হচ্ছে নামাজ
ঈমানের পর আল্লাহর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হুকুম হচ্ছে ‘নামাজ’ । রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর পক্ষ থেকে বার বার নামাজের তাগিদ পেয়েছেন। কুরআনে পাকে আল্লাহ তাআলা বিভিন্ন জায়গায় সরাসরি অনেক বার সালাত শব্দ উল্লেখ করে নামাজের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন।

নামাজ সম্পর্কে আল্লাহতায়ালা সকল নবীকে নির্দেশ দিয়েছেন। প্রত্যেক যুগের সব উম্মতের জন্য নামাজের বিধান ছিলো। মুমিন-মুসলমানদের জান্নাতে যাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো- একনিষ্ঠ ও বিনয়ের সঙ্গে নামাজ আদায় করা।
পবিত্র কোরআনুল কারিমে বলা হয়েছে, নিশ্চয়ই সে সব মুমিন সফল হবে, যারা বিনয়ের সঙ্গে নামাজ আদায় করে। সূরা মুমিনুন: ১-২
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলাম- (হে আল্লাহর রাসুল!) আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বেশি প্রিয় আমল কোনটি? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘নামাজ’। (বুখারি ও মুসলিম)
উল্লেখিত হাদিস বর্ণনা প্রসঙ্গে বিশিষ্ট ইসলামি স্কলার আল্লামা মোল্লা আলি ক্বারী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ‘এ হাদিসের মাধ্যমেই আলেমগণ ঈমানের পর নামাজকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে করেন।
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা মনোনীত সর্বোত্তম আমল হলো নামাজ। অতএব যে বেশি বেশি নামাজ পড়তে সক্ষম, সে যেন বেশি বেশি নামাজ পড়ে। (তাবারানি)
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাজের গুরুত্ব বুঝাতে হাদিসের মাধ্যমে একটি উপমা প্রদান করেছেন।
হজরত আবু যর গিফারি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন যে, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক সময় শীতকালে বাইরে (কোথা্র) তাশরিফ আনলেন। তখন গাছের পাথা ঝরার মওসুম ছিল। নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম গাছের একটি ডাল হাত দিয়ে ধরলেন। ফলে তার পাতা আরও বেশি ঝরতে লাগল।
অতঃপর তিনি বললেন, হে আবু যর! আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমি উপস্থিত। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করলেন-
‘মুসলমান বান্দা যখন আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নামাজ আদায় করে, তখন তার থেকে পাপসমূহ ঝরে পড়ে; যেমন এ গাছের পাতা ঝরে পড়ছে। (মুসনাদে আহমদ)
নামাজই একমাত্র ইবাদত; যার মাধ্যমে মানুষ দুনিয়ার সব কাজ ছেড়ে শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য নিবেদিত হয়ে যায়। এ নামাজই মানুষকে দুনিয়ার সব পাপ-পংকিলতা থেকে ধুয়ে মুছে পাক-সাফ করে দেয়। দুনিয়ার সব অন্যায়-অনাচার থেকে হেফাজত করে।
যারা নামাজের বিষয়ে আল্লাহকে সন্তুষ্ট করতে পারবে, তাদের জন্য পরবর্তী বিষয় সহজ হবে। বর্ণিত হাদিসের মাধ্যমেও স্পষ্ট যে, সমস্ত ইবাদতের মধ্যে নামাজ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

ইচ্ছাকৃতভাবে এক ওয়াক্ত নামাজ সমূহ তরককারী বান্দার সঙ্গে আল্লাহ সম্পর্ক ছেদের ঘোষণা দিয়েছেন।
তাই প্রিয়নবি হযরত মুহম্মদ (সা.) নামাজকে ঈমানের পর স্থান দিয়েছেন।